
আমরা প্রত্যেকেই প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিখতে ছাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ঐ বিষয়টা পুরোপুরি শিখে উটতে পারি না আমাদের কিছুভুলের জন্য। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে যেকোন বিষয়ে নিজেকে একদম বেসিক থেকে শুরু করে একেবারে প্রো হওয়ার জন্য কি কি করবেন? এখানে একদম মূল পয়েন্ট গুলো নিয়ে জানব যা আমরা প্রতিনিয়ত ভুল করে চলেছি।
কি শিখবেন তা নির্ধারণ করা
যেকোন কিছু শিখুন অথবা কিছু করুন, একটা সঠিক লক্ষ্য থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। লক্ষ্য ছাড়া পরিকল্পনা হল সমুদ্রের মাঝে ভেসে ভেড়ানো একটা নৌকার মত, যার কোন গন্তব্যই ঠিক করা নাই সে কোথায় যাবে। তাই সেটা সমুদ্রের ডেউ এর সাথে সাথে ভেসে ভেড়াচ্ছে। আপনার যদি সঠিক কোন লক্ষ্য নির্ধারণ করা না থাকে তাহলে আপনিও সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন না। এজন্য প্রথমেই আপনাকে একটা লক্ষ্য নির্ধারণকরতে হবে।
সঠিক গাইডলাইন ফলো করা
মনে করুন, আপনার নির্ধারণ করা গন্তব্য হল আপনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাবেন। এখন আপনি যদি কোন রাস্তা দিয়ে যাবেন সেটাই যদি না জানেন তাহলে আপনি যাবেন কিভাবে? এছাড়া রাস্তার মধ্যে কোথায় কোথায় থামতে হবে, কোন রাস্তাটা বিপদজনক, আপনার কিছু প্রয়োজন হলে কোন জায়গায় পাবেন এ বিষয়গুলোও আপনাকে জানতে হবে।
আপনি এখানে বলতে পারেন যে আমি স্টেশন থেকে গাড়িতে উঠলেই তু আমাকে ঢাকায় নামিয়ে দিবে। এটা ঠিক, তবে এটা তখনই প্রযোজ্য হবে যখন আপনি কোন ইনস্টিটিউট বা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা আপনার নির্দিষ্ট করা বিষয়ে অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে শিখবেন। এখানে তারা সঠিক একটা সিলেভাস তৈরি করে রাখে যেটা অনুযায়ী আপনাকে তারা শিখাবে।
আমার বিষয়টা হল তখনই যখন আপনি নিজেই নিজেকে দক্ষ করে তুলতে চাচ্ছেন। এজন্য আপনাকে ঐ বিষয়ে যারা অলরেডি দক্ষ হয়ে গেছে আপনাকে তাদের কাছ থেকে আইডিয়া নিতে হবে। বর্তমানে অনলাইনে যেকোন কিছুর তথ্যে ভরপুর। আপনাকে শুধুমাত্র একটু সার্চ বক্সে আপনার কি প্রয়োজন তা লিখে খুঁজে বের করে নিতে হবে। যেমন, আপনি ইউটিউব লিখতে পারেন [How to become a complete (Your choices subject/topic)] এভাবে লিখে সার্চ করেন তাহলে আপনি দেখতে পাবেন যারা ঔ বিষয়ে দক্ষ হয়েছে তারা কিভাবে হয়েছে, কি কি স্টেপ তারা অনুসরণ করেছে ঐ সকল বিষয় গুলো তারা আলোচনা করে। এরপর ঐখান থেকে যার গাইডলাইনটা আপনার ভালো লাগবে সে অনুযায়ী অনুসরণ করে যেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ChatGPT কি? কিভাবে কাজ করে? বিস্তারিত
কোন মাধ্যমে শিখবেন তা নির্ধারণ করা
যেকোন কিছু শিখার জন্য অনেক মাধ্যম আছে। একেকজনের কাছে একেকটা প্রিয়। তবে এমন অনেক মাধ্যম আছে যেখানে সেল্ফ কন্ট্রোল করার অফশন থাকে না। যার ফলে শিখার ছেয়ে সময় নস্টটা বেশি হয়ে যায়।
বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের রিসার্চ মতে যেকোন কিছু শিখার সবচেয়ে বেস্ট অফশন হচ্ছে বই পড়ে শিখা। বই পড়ে আপনি যেমন সহজে এবং কম সময়ের মধ্যে ডিস্ট্রাকশনমুক্ত ভাবে যেটা আয়ত্ব করতে পারবেন। তা অন্য মাধ্যমে করা কস্টকর। এছাড়া বইয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো সহজেই দাগিয়ে রাখা যায়। বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের ব্রেনের বিকাশটা অনেক বেশি হয়। এজন্যই তু আমাদেরকে ছোট থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বই পড়ানো হয়। আর এখনতু ই–লার্নিং সিস্টেম আসায় বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেকটা কমে গেছে।
তাই নির্দিষ্ট যেকোন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে বই পড়ার মাধ্যমে চেষ্টা করতে হবে।
যদি দেখেন আপনার সিলেক্ট করা বিষয়ে কোন বই নেই অথবা যা আছে তা আপনার নাগালের বাইরে তাহলে আপনাকে দ্বিতীয় অপশনে যেতে হবে তা হল কোর্স করা অথবা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করা।
কোর্স করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই মনযোগ দিতে হবে। না হলে আপনার সময় এবং ইনভেস্ট দুইটাই ভৃতা হয়ে যাবে। আপনাকে তু কোর্স যেকোন ইনস্টিটিউট বা যেকোন প্লাটফর্ম থেকে শিখতে হবে এক্ষেত্রে আপনি যেখান থেকেই শিখেন না কেন আপনাকে অবশ্যই সেই প্লাটফর্ম বা ইনস্টিটিউট সম্পর্কে জানতে হবে। আগে যারা ঐখান থেকে শিখেছে তাদের থেকে তথ্য নেন, তাহলে আপনার মধ্যে একটা ধারণা হয়ে যাবে। তবে এখানে আরেকটা বিষয় তা হল বর্তমানে বেশিরভাগ ডিজিটাল লার্নিং প্লাটফর্ম গুলো অনলাইন ভিত্তিক। যার ফলে এখানে প্রতারণার বিষয়টাও বেশি হয়ে থাকে। যদি সম্ভব হয় আমি আপনাকে বলব সরাসরি অফলাইনে শিখার জন্য। এতে আপনার শিখাটা সহজ এবং কমসময়ের মধ্যে হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ ২০২৩ এ যে ৫ টি স্কিল আপনার শিখা উচিৎ
কেমন সময়ের মধ্যে শেষ করবেন তা নির্ধারণ করা
যেকোন কিছু শুরুর ক্ষেত্রে আমরা সময় নির্ধারণ করে রাখি কিন্তু শেষ করার জন্য আমরা নির্দিষ্ট কোন সময় নির্ধারণ করে রাখি না। যারফলে যেটা হয় আমরা শিখতে শুরু করি ঠিকই মাঝপথে আমরা শিখার প্রতি প্রোডাক্টিভিটি ধরে রাখতে পারি না। আপনার যদি শেষ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা থাকে তাহলে আপনি আপনার সর্বোচ্চ দিয়ে চেস্টা করবেন। যেমন: আপনি অফিসের বস আপনাকে একটা কাজ দিয়েছে এবং আপনাকে বলেছে তিনদিনের মধ্যে এটা শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি প্রয়োজনে রাতে না ঘুমিয়ে কাজটা কমপ্লিট করবেন, কারণ না হলে আপনার বস আপনাকে বকা দিবে বা চাকরি বাতিল করে দিতে পারে। এজন্য সকল ক্ষেত্রে শেষ করার সময়টা নির্ধারণ থাকা প্রয়োজন।
কতটুকু সময় দিবেন তা নির্ধারণ করা
আমরা সকলেই জানি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সময়। এ সময়কে যে যত ভালোভাবে ব্যবহার করবে সে জীবনে তত উন্নতি করতেপারবে।
এখন মূল বিষয় হচ্ছে আপনি কোন কিছু শিখার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাই বলে কিন্তু আপনার দিনের সম্পূর্ণ সময়টা সেই কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনার আরও অন্যান্য কাজ বা স্কুল–কলেজে যাওয়া কিংবা চাকরি থাকতে পারে। আবার এমনও অনেকেই আছে যারা তাদের সম্পূর্ণ সময় টুকু দিতে আগ্রহী অনেকেই দিয়েও থাকে। এমন হলে ভালো তবে সেটা যদি আপনি করতে না পারেন তাহলে আপনার জন্য একটা সাজেশন হবে একটা নির্দিষ্ট টাইম ঠিক করা। যত কিছুই হোক আপনি প্রতিদিন চেস্টা করবেন শিখার জন্য ঠিক করা টাইমটা দেওয়ার। এভাবে আপনি টাইম দিলে প্রথম প্রথম রেজাল্ট দেখতে পাবেন না তবে একটা নির্দিষ্ট পর গিয়ে বিশাল বড় পরিবর্তন দেখতে পাবেন। সময়ের সাথে সাথে নিজের পরিবর্তন গুলোও লক্ষ্য করতে থাকবেন্
সুতরাং, যেটাই শিখেন বা যেটাই করেন চেস্টা করবেন সঠিক নিয়মে সম্পূর্ণ ভাবে করার। সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।