
বর্তমান সময়ে এমন কাউকে খুঁজে পাবেন না যে কিনা মোবাইলের প্রতি আসক্ত নয়। ছোট্ট বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ দাদা-দাদীরা পর্যন্ত এখন মোবাইলের প্রতি আসক্ত। এছাড়া আমরা ঘুম থেকেই প্রথমে আমাদের মোবাইল ই ছেক করে থাকি এবং রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি।
আমাদের একটি দিনের বেশ কিছু সময় ছলে যায় মোবাইলে ফেসবুক, মেসেন্জার, ইউটিউব, বা টিকটক এবং বিভিন্ন গেমস খেলতে খেলতে। কিন্তু এতে আমরা কখনো চিন্তা করিনা যে আমাদের কতটুকু খারাপ হচ্ছে এবং আমাদের কতটুকু সময় নষ্ট হচ্ছে। আজকে আমরা জানবো মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে বেঁচে থাকার জন্য কিছু উপায়।
১. সময় নির্ধারণ
আমরা মোবাইল ব্যবহারের সময় কখনও খেয়াল করিনি যে আমরা কতক্ষণ ধরে মোবাইলটি ব্যবহার করতেছি। এভাবে আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা চলে যায় কিন্তু আমরা এটার ব্যবহার ছাড়তে পারিনা। এটার একটা সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান হচ্ছে সময় নির্ধারণ।
আমরা যদি নির্দিষ্ট অ্যাপ এর জন্য নির্দিষ্ট করে সময় নির্ধারণ করে দিই তাহলে আমরা বুঝতে পারবো কতক্ষণ ধরে ওই অ্যাপটি ব্যবহার করতেছি এবং ওই নির্দিষ্ট সময়টি শেষ হয়ে গেলে ওই দিনের জন্য ওই অ্যাপটি ব্লক করে দেওয়া হবে। এতে আমরা ওই দিনের জন্য অ্যাপস টি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকব।
বর্তমান সময়ে আমরা কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে থাকি আমরা যদি ফেসবুক মেসেঞ্জার এবং যে অ্যাপ গুলো অতিরিক্ত ব্যবহার হয় তাহলে ওই গুলোর জন্য সময় নির্ধারণ করে দিতে পারি। এভাবে আমরা আমাদের মোবাইল ব্যবহারের আসক্তিকে একটু হলেও কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারবো।
প্রথমদিকে হয়তো এটা কার্যকর নাও হতে পারে তবে আস্তে আস্তে দেখবেন আপনি সত্যি সত্যি নিজেকে আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারছেন।
সময় নির্ধারণ করার জন্য আপনারা মোবাইলে থাকা (Digital Well-being) ডিজিটাল ওয়েল্ভিং ব্যবহার করতে পারেন অথবা বিভিন্ন অ্যাপস ট্র্যাকার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
Download Digital Weellbeing: Google play store
Download Apps Usage: Google play store
২. নোটিফিকেশন অফ রাখা
মোবাইল ফোনের আসত্তি বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর কারণ হল অ্যাপসের নোটিফিকেশনগুলো। আমরা যখন মোবাইলটি কিছু সময়ের জন্য রেখে দেই তখনই বিভিন্ন এপস এর নোটিফিকেশন এর শব্দ শুনে আমরা আবার মোবাইলটি হাতে নেই।
তখন আমরা আবার কিছু সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সেই ক্ষতিকর অ্যাপস গুলোর নোটিফিকেশন অফ রাখতে পারি অথবা ডোন্ট ডিস্টার্ব মোড অন করে রাখতে পারি।
এতে আমরা সরাসরি ঐ অ্যাপসে প্রবেশ না করা পর্যন্ত অন্য কোন নোটিফিকেশন মোবাইলে আসবেনা যার ফলে আমরা কিছু সময় ওই অ্যাপস গুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে পারবো। এভাবেই আমরা মোবাইলের আসত্তি কে কমিয়ে আনতে পারব।
আরো পড়ুনঃ সফলতার পাঁচটি সহজ সূত্র। যা আপনাকে সফল হতে সাহায্য করবে।
৩. মোবাইল থেকে দূরে থাকা
মোবাইল ফোন একটি ছোট এবং সহজে বহনযোগ্য পণ্য হয় এটি সবসময়ই আমাদের সাথে থাকে। যার ফলে আমরা যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় এটি ব্যবহার করে থাকি। আমরা যদি আমাদের ফোনটি কিছু সময়ের জন্য আমাদের কাছ থেকে দূরে রাখি তাহলে আমরা ওই কিছু সময়ের জন্য এটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকব।
তাই যতবেশি সম্ভব মোবাইল ফোনকে নিজের কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন এটার মাধ্যমে কিন্তু আপনি মোবাইল ফোনের আসক্তিকে কমিয়ে আনতে পারবেন।
৪. নিজেকে ব্যাস্ত রাখা
সাধারণভাবে আমরা যখন অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থাকে তখন অন্য কিছুর প্রতি খেয়াল টা খুব কম থাকে। ঠিক তেমনি ভাবে এটি মোবাইল এর ক্ষেত্রেও কার্যকর। আমি অনেকবার খেয়াল করে দেখলাম আমি যখন অন্য কোন কাজ করি তখন মোবাইলের প্রতি খেয়ালটা তেমন আর থাকে না। কারণ ওই সময় আমাদের মস্তিষ্ক ওই কাজকে বেশি ফোকাস করে যার ফলে তখন আমাদের খেয়ালটা অন্যদিকে খুব কম যাই।
তাই মোবাইল ফোনের আসক্তি কমাতে যত বেশি সম্ভব নিজেকে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন এবং ওই সময় মোবাইল ফোনকে নিজের থেকে কিছুটা দূরে রাখুন।
আরো পড়ুনঃ ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা ৫টি মাধ্যম ২০২২
৫. ফোকাস মোড ব্যবহার করা।
আমাদের ব্যবহার করা প্রত্যেকে স্মার্টফোনে কিন্তু ফোকাস মোড টি রয়েছে এটি ব্যবহার করে কিন্তু আমরা আমাদের মোবাইলের বিরক্তিকর অ্যাপস গুলো থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিরত থাকতে পারি। আপনি যখন আপনার মোবাইলের ফোকাস মোডে গিয়ে আপনার বিরক্তিকর অ্যাপস গুলো সিলেক্ট করে ফোকাস মোট অন করে দিবেন তখন ওই অ্যাপসগুলো আপনার ফোকাস মোড এ চলে যাবে।
আর এই সময়ে আপনি ওই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করতে পারবেন না এবং ওই অ্যাপস থেকে সকল ধরনের নোটিফিকেশন ও আসবেনা। যার ফলে আপনি নির্দিষ্ট কোন কাজ মনোযোগ সহকারে করতে পারবেন।
এতে আপনি আস্তে আস্তে ওই অ্যাপসগুলোর ব্যবহার কমিয়ে আনতে পারবেন এবং মোবাইল ব্যবহারের আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারবেন। যদি আপনার ফোনে ফোকাস মুড অপশনটি না থাকে তাহলে আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে ফোকাস মোড এর যে কোন অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
Downlod Fucos Mode: Google play store
এই ছিল পাঁচটা উপায় মোবাইল ফোন এর আসক্তি থেকে বেচেঁ থাকার। এগুলো প্রতিটা পদক্ষেপ যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে অবশই আপনি মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারবনে।
উপকারী মনে হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।