ব্লগিং কি? কিভাবে শুরু করবেন? ব্লগিং করে কিভাবে আয় করবেন?

বর্তমান সময়ে অন্যান্য বিষয় এর মত ব্লগিং ও অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিজের জানা বিষয় গুলো সবার সাথে শেয়ার করে ভালো পরিমাণের অর্থ আয় করা যায় ব্লগিং এর মাধ্যমে। পাশাপাশি অনেকেই ব্লগিংকে নিজেদের পেশা হিসেবে পছন্দ করে নিয়েছে। অনেকেই নিজেদের অবসর সময়ে ব্লগিং করছে। এছাড়া এ বিষয়ে তেমন কোন ঝামেলা না থাকায় নতুনরা সহজেই শুরু করতে পারে।

চলুন জেনে নিই, ব্লগিং কি? কিভাবে শুরু করবেন? কিভাবে আয় করবেন? বিস্তারিত

ব্লগ কি?

ব্লগ হল ইংরেজি blog শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ। ইংরেজি Weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল Blog. ব্লগ হল একটা অনলাইন ডায়রি। যেখানে নিজের জানা-অজানা বিষয় গুলো সবার সাথে শেয়ার করা হয়।

ব্লগিং কি?

নিজেদের জানা-অজানা বিষয় গুলোকে কোন একটা ওয়েবসাইটে লিখে অনলাইনে সবার সাথে শেয়ার করাই হলো ব্লগিং। সেটা নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের উপর হতে পারে অথবা যেকোন বিষয় নিয়ে হতে পারে।

ব্লগার কারা?

সাধারনত, যারা ব্লগিং নিয়ে কাজ করে, অনলাইনে লেখা-লেখি করে করে তাদেরকে ব্লগার বলা হয়।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন

ব্লগিং শুরু করার আগে আপনার ব্লগিং নিয়ে অল্প একটু হলেও দক্ষতা থাকতে হবে। যেমনঃ আর্টিকেল গুলো কিভাবে লেখবেন, কিভাবে ব্লগে পোস্ট করবেন, সাইট মেনেজমেন্ট, এসইও, ইত্যাদি বিষয়ে অল্প একটু দক্ষতা থাকতে হবে।

আপনার যদি কোন বিষয়েই একদম দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনি গুগল বা ইউটিউব থেকে শিখে নিতে পারেন।

নিস সিলেক্ট করা

ব্লগিং করার জন্য প্রথমে আপনাকে নিস সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তা সিলেক্ট করা। আপনি কি নির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন? না মাল্টি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তা সিলেক্ট করা। প্রথম দিকে সহজ কোন বিষয় নিয়ে শুরু করাই ভালো।

আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং কি? Digital Marketing bangla guideline

নিস রিসার্চ

কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তা সিলেক্ট করার পর আপনাকে সেই বিষয় এর উপর রিসার্চ করতে হবে। যেমন: সেই বিষয় এর উপর কোন কোন সাইট গুলো আছে, তাদের রেঙ্কিং কেমন, ভিজিটর কত? আর্টিকেল কতটি? কনটেন্ট কেমন, ভিজিটর কোথায় থেকে আসছে, ইত্যাদি বিষয় গুলো রিসার্চ করতে হবে। আপনার সিলেক্ট করা নিস এ যদি কম্পিটিশন বেশি হয় তাহলে আপনার রেঙ্কিং পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। আর আপনার রেঙ্কিং না পাওয়া মানে আপনার ভিজিটর না পাওয়া। তাই, এই বিষয়গুলো নিয়ে রিসার্চ করতে হবে।

নাম নির্বাচন

নিস রিসার্চ কম্পিলট হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হল একটা নাম নির্বাচন করা। কি নামে আপনার ব্লগ সাইটটি করবেন তা ঠিক করা। নাম ঠিক করার সময় দেখে নিন সেই নামে ডোমেন রেজিস্টার করা আছে কিনা। যদি না থাকে তাহলে আপনি রেজিস্টার করে নিন।

প্লাটফর্ম নির্বাচন

এখন আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে কোন প্লাটফর্ম দিয়ে আপনি শুরু করবেন। বর্তমান সময়ে দুইটি প্লাটফর্ম সবচেয়ে জনপ্রিয়।

১. ব্লগার

২. ওয়ার্ডপ্রেস

যদি আপনার টাকা খরচ করার ইচ্ছা বা সামর্থ্য না থাকে তাহলে আপনি ব্লগার দিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে, এখানে অনেক সুবিধা আপনি পাবেন না, যা ওয়ার্ডপ্রেস এ পাবেন। সাধারনভাবে ব্লগিং করার জন্য ব্লগার ঠিক আছে। কিন্ত, আপনি যদি এডভান্স লেভেলের ব্লগিং করতে ছান তাহলে অল্প কিছু টাকা ব্যায় করে ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুরু করেন।

সাইট তৈরি

আপনার প্লাটফর্ম নির্বাচন করা হয়ে গেলে আপনার প্রয়োজনীয় ডোমেন-হোস্টিং নিয়ে আপনার সাইটটি তৈরি করে ফেলুন। আপনি নিজেই পারলে নিজে করুন। অন্যতায়, ভালো একজন ওয়েব ডেভেলপার দিয়ে তৈরি করে নিন।

সাইটটি তৈরি অবশ্যই খেয়াল করবেন সাইট এর ডিজাইন অতিরিক্ত না হয়ে যায়। সাইট যেন একদম হাল্কা থাকে। কনটেন্ট গুলো সহজেই পড়া যায়। সাইটটি যেন ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়। এই বিষয় গুলো সঠিকভাবে করবেন।

কনটেন্ট পাবলিশ

সাইট তৈরি করা হয়ে গেলে আপনার কনটেন্ট বা আর্টিকেল গুলো পাবলিশ করতে পারেন। পাবলিশ করার আগে আর্টিকেলটি কয়েকবার মনযোগ সহকারে পড়ে দেখুন। কোন ধরনের ভুল থাকলে তা সঠিক করে নিন। প্রয়োজনে আরো কিছু যুক্ত করতে হলে করে নিন। এরপর কনটেন্ট গুলো পাবলিশ করুন।

আরো পড়ুনঃ প্রোগ্রামিং কি? কত প্রকার ও কি কি? (Programming bangla guidline)

সাইট এসইও করা

আপনি শুধু আর্টিকেল লিখলেন আর পাবলিশ করলেন এতে কোন কাজ হবে না। আপনার সাইট এবং কনটেন্ট গুলোকে এসইও করতে হবে। এসইও হল সার্চ ইজ্ঞিন অপ্টিমাইজেশন। অর্থাৎ, আপনার সাইট এবং সাইট এর কনটেন্ট গুলোকে বিভিন্ন সার্চ ইজ্ঞিন গুলোতে শু করানো। আপনি যদি সঠিকভাবে এসইও না করেন তাহলে আপনি রেঙ্কিং পাবেন না। রেঙ্কিং ছাড়া তেমন কোন ভিজিটর পাবেন না। তাই আপনাকে সঠিকভাবে এসইও করতে হবে।

ব্লগিং করে কিভাবে আয় করবেন

ব্লগিং করে আয় করার হাজারো মাধ্যম আছে। আপনাকে শুধুমাত্র আপনার সাইটাকে আয় করার মত করে তৈরি করে নিতে হবে। এর জন্য আপনার সাইটে প্রচুর ভিজিটর থাকতে হবে। ভালো কনটেন্ট তাকতে হবে। আপনাকে ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে। চলুন কয়েকটি মাধ্যম সম্পর্কে জেনে নিই।

গুগল এডসেন্স

বিজ্ঞাপন দাতা কোম্পানি গুলোর মধ্যে গুগল এডসেন্স হল সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয়। আপনার সাইটটি ভালো মানের হয়ে থাকে তাহলে আপনি গুগল এডসেন্স এ বিজ্ঞাপনের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। এরপর: তারা আপনার সাইটি দেখে সবকিছু ঠিক তাকলে এপ্রুভ করে দিবে। এখন আপনি তাদের বিজ্ঞাপন গুলো আপনার সাইটে বসিয়ে ভালো পরিমাণের অর্থ আয় করতে পাবেন। গুগল এডসেন্স ছাড়াও আরো অনেক বিজ্ঞাপন দাতা কোম্পানি আছে। তবে এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়।

স্পন্সর এ্যাড

আপনার সাইটটি ভালো কোয়ালিটির এবং ভালো ভিজিটর থাকে অনেক কোম্পানি আপনাকে ইনবক্স করবে তাদের পণ্যটি আপনার সাইটে প্রমোট করার জন্য। এতে আপনি বড় অংকের টাকা পেতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

বর্তমানে অন্য সব মার্কেটিং এর মত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উটেছে। কোন কোম্পানির দ্বিতীয় ব্যাক্তি হয়ে তৃতীয় ব্যাক্তির কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করাই হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

অর্থাৎ কোন কোম্পানির যেকোন একটি পণ্য আপনি আপনার সাইটে প্রমোট করলেন। এতে কোন একজন ভিজিটর ঐকানে গিয়ে পণ্যটি ক্রয় করল। এতে পণ্যটি আপনার মাধ্যমে ক্রয় করায় তারা আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ আপনাকে দিয়ে দিবে। এভাবে ভালো পরিমানের টাকা আয় করতে পারবেন আপনার ব্লগ সাইটটির মাধ্যমে।

নিজেদের পণ্য বিক্রি

আপনার যদি কোন ধরনের পণ্য থাকে সেগুলো আপনি সাইটে বিক্রি করতে পারেন। অন্য কোন পণ্য না থাকলেও নিজের তৈরি করা বই, পিডিএফ, ভিডিও, কোর্স যেকোন কিছু আপনি সাইটে বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অন্যান্য সার্ভিস বিক্রি

আপনার সাইটটি যখন একটি প্রফেশনাল ব্লগিং সাইট এ পরিণত হবে তখন অনেকেই আপনার কাছ থেকে ব্যাকলিংক, কনটেন্ট বা অন্যান্য সার্ভিস নিতে ছাইবে। যা দ্বারাও আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

এছাড়া আরো অনেক পদ্ধতি আছে যেগুলোর মাধ্যমেও আপনি আয় করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ (Passive Income) প্যাসিভ ইনকাম কি? কেন প্যাসিভ ইনকাম আয়ের সেরা মাধ্যম

ক্যারিয়ার হিসেবে ব্লগিং কেমন হবে

আপনার যে কাজটা আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে পছন্দ করবেন সেটা যেন সারাজীবন করতে পারেন এমন হয়। আর ব্লগিং হল এমন একটা কাজ যেটা সারাজীবন থাকবে। ব্লগিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানুষ প্রতিদিনি নতুন নতুন বিষয় নিয়ে জানতে ব্লগ পড়তেছে।

একটাই কথাই বলব, ক্যারিয়ার হিসেবে ব্লগিং কখনোই খারাপ হবে না এবং এটার চাহিদাও কখনো কমবে না। আর যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন সেটা নিয়ে সবসময় রিসার্চ করতে হবে। অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবং ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে। তাহলেই আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
fullbrightscholarships