ইন্টারনেট কি? কিভাবে কাজ করে? কেন গুরুত্বপূর্ণ? বিস্তারিত

ইন্টারনেট ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেট। যেদিকে যাই সেদিকেই শুধু এই ইন্টারনেট এর ব্যবহার। ইন্টারনেট সারা পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। অফিসের কাজ করা থেকে কেনাকাটা পর্যন্ত সকল কিছুই এখন ইন্টারনেট এর মাধ্যমে করা যায়। ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন কাজ গুলো অনেক সহজ করে দিয়েছে বিশেষ করে এই করোনা কালীন সময়ে ইন্টারনেট আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। আজ আমি আপনাদের সাথে কথা বলবো “ইন্টারনেট কি”, “কিভাবে ইন্টারনেট কাজ করে” ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। আশা করি আমার এই সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন।

বর্তমানের  এই ডিজিটাল সময়ে স্কুলের একটা ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে ৬০/৭০ বছরের বৃদ্ধের হাতে একটি স্মার্টফোন থাকে যারা সকলেই ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক সহ অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্ম এর সাথে যুক্ত আছে যা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ইন্টারনেট এর জন্য। ইন্টারনেট হলো আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ। 

 একজন মানুষ একদিন না খেয়েও বা একদিন না ঘুমিয়েও থাকতে পারে তবে কেউ একদিন ইন্টারনেট এর সাথে যুক্ত না হয়ে থাকতে পারে না। ইন্টারনেট আমাদেরকে ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত করে রাখে।  কথা না বাড়িয়ে চলুন আমাদের মেইন টপিকে চলে আসি। 

 ইন্টারনেট কি?

  ইন্টারনেট হলো নেটওয়ার্ক এর নেটওয়ার্ক।  যে পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্বের সকল তথ্য এবং সকল কম্পিউটারকে একসাথে যুক্ত করা হয় তাকে ইন্টারনেট বলে। এই ইন্টারনেট ব্যবস্থায় একটি কম্পিউটার এর সাথে অপর একটি কম্পিউটার যুক্ত করা হয়।  ইন্টারনেট এর কোনো তথ্য পেতে হলে আমাদের World Wide Web বা www এর সাথে যুক্ত হতে হয় এবং Hyper Text Transfer Protocol বা http এর মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।

 ইন্টারনেট এর ইতিহাস | ইন্টারনেট এর জন্মকাল 

  ১৯৬৯ সালে  মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি ARPA পরীক্ষামূলকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা এই নেটওয়ার্ক আরপানেট হিসেবে পরিচিত ছিলো। প্রথম দিকে এটি শুধু সামরিক বাহিনীর জন্য তৈরি করা হলেও এর সুবিধা গুলো দেখে এর কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেটকে সকলের জন্য এই সেবা চালু করে দেয়। ১৯৮৯ সালে আইএসপি দ্বারা সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয় আজকের এই ইন্টারনেট। ১৯৯০ সাল বা এর পর থেকে পশ্চিমাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হতে থাকে। ধীরে ধীরে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং আজ সকল জায়গায় ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।

 কিভাবে ইন্টারনেট কাজ করে

  আপনার মনে হয়ত প্রশ্ন আসতে পারে যে, এই ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে? বা কিভাবে এই ইন্টারনেট আমাদের মোবাইল পর্যন্ত আসে।  চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।

 এখন বেশি ব্যবহৃত না হলেও একসময় সকল প্রতিষ্ঠান এবং ঘরে ঘরে ল্যান্ড ফোন থাকতো। যেগুলো তার দিয়ে একটি সাথে অন্যটি সংযুক্ত করা হতো। ঠিক একই ভাবে তার দিয়ে এবং বিভিন্ন ইন্টারনেট অপারেটরদের Frequency এর মাধ্যমে সকল কম্পিউটার কে একসাথে যুক্ত করা হয়ে থাকে। ল্যান্ড ফোনে যেমন একজনকে ফোন দিলে অন্যজনের কাছে যায় না বা অন্য কেউ তাদের কথা শুনতে পারে না ঠিক তেমনি কেউ তাইলেই ইন্টারনেট থেকে যেকোনো তথ্য দেখতে পারবে না এর জন্য তার প্রয়োজন হবে নিদিষ্ট একটি আইপি এড্রেস যা তাকে ঐ তথ্য পর্যন্ত নিয়ে যাবে।  

ইন্টারনেট ব্যবহার করতে কি কি লাগবে?

 আমরা সকলেই জানি যে ইন্টারনেট যে যদি আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে আমাদের একটি মোবাইল বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য কোনো অপারেট বা ওয়াই ফাই রাউটার লাগবে।  সবশেষে একটি জিনিস লাগবে সেটা হলো একটি ওয়েব ব্রাউজার যার মাধ্যমে আপনি নিদিষ্ট কোনো আইপি এড্রেস বা ওয়েবসাইট এ যেতে পারবেন।

 

এবার আসুন জেনে নিই ইন্টারনেট এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলোঃ

 ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা সমুহঃ

 আরো পড়ুনঃ (Passive Income) প্যাসিভ ইনকাম কি? কেন প্যাসিভ ইনকাম আয়ের সেরা মাধ্যম

 ১.  দৈনন্দিন কাজ এ ব্যবহার

 যেমন ধরুন আপনি অসুস্থ। রান্না করে খেতে পারবেন না। আগে এমন হলে সবাইকে না খেয়েই থাকতে হতো কিন্তু এই ইন্টারনেট এর যুগে ঘরে বসেই আপনি অনলাইনে অর্ডার দিয়ে খাবার কিনে আনতে পারবেন। শহর ছাড়া  এমনকি অনেক গ্রামেও এখন এই সুবিধা পাওয়া যায়।

 ২. কেনা কাটা এ ব্যবহার – 

 এখন আর সারা মার্কেট ঘুরে ঘুরে কাউকে কেনাকাটা করতে হয়না। যে কেউ তাইলে এখন বিভিন্ন প্লাটফর্মে গিয়ে পছন্দের জিনিস গুলো অর্ডার করতে পারবে এবং কয়েকদিনেই মাঝেই তা ঘরে পৌছে যাবে। কাপড় বাদেও এখন অনলাইনে সকল সবজি পাওয়া যায়।

 ৩. অনলাইনে ইনকাম এ ব্যবহার

 এখন আর আপনাকে কড়া রোদের মাঝে কাজ করে টাকা আয় করতে হয় না। এখন কারোর কাছে একটি মোবাইল বা পিসি আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই অনলাইন থেকে টাকা আয় করা যায়।

 যারা বেকার আছেন বা এখন পড়ালেখা করছেন তারা সহজেই মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন এই ইন্টারনেট এর মাধ্যমে।

৪. অফিসের কাজ এ ব্যবহার

ইন্টারনেট এর এই সুবিধাটি বেশি পাওয়া গিয়েছে এই করোনার সময়ে। বিশ্বের অনেক বড় বড় কম্পানিও তাদের সকল কার্মচারী এবং কর্মকর্তা কে অনলাইনের মাধ্যমেই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।  অনেক কম্পানি ঠিক করে নিয়েছে যে তারা ভার্চুয়াল মাধ্যমেই তাদের সকল কাজ করিয়ে নিবে। এতে কারোর অফিসে যাওয়ার ঝামেলা থাকে না এবং কম্পানিরও অনেক বাড়তি খরচ এবং সময় বেঁচে যায়।

 আরো পড়ুনঃ ব্লগিং কি? কিভাবে শুরু করবেন? ব্লগিং করে কিভাবে আয় করবেন?

ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা সমুহঃ

 

সব কিছুর একটি ভালো এবং একটি খারাপ দিক আছে ঠিক তেমনি ইন্টারনেট এরও কিছু খারাপ দিক বা অসুবিধা রয়েছে।  তবে অসুবিধা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম যদি আপনি সেটাকে প্রয়োজনের ছেয়ে বেশি ব্যবহার না করেন। 

অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমাদের যে যে ক্ষতি গুলো হতে পারে

১. মাথা এবং চোখের সমস্যা

আপনি যদি বলেন যে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ফলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি কোনটি হয়, তাহলে আমি বলবো যে সেটা হলো মাথা এবং চোখের ক্ষতি। কেউ যদি একটানা মোবাইল বা পিসি নিয়ে বসে থাকে তাহলে সে মানসিক সমস্যায় ভুগতে পারে। বিশেষ করে বেশিক্ষন মোবাইল বা পিসির দিকে তাকিয়ে থাকলে আমাদের চোখের বেশি ক্ষতি হয়।

২. হার্টের সমস্যা

এখন আমাদের দেশে ৪ জেনারেশন বা 4G স্পিড এর ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি এই নেট এর তরঙ্গ দেখতে পারেন তাহলে আতঁকে উঠবেন। প্রতিদিন আমাদের শরীরে অনেক পরিমাণ তরঙ্গ প্রবেশ করছে যার মাধ্যমে এখন সবার মাঝে কিছু নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। রাতের বেলায় মাথার কাছে মোবাইল রাখাও বিপদ জনক। তবে যে সেটা হলো মাথা এবং চোখের ক্ষতি।

৩. সবচেয়ে বড় অসুবিধা বা ক্ষতি হলো আসক্তি

বর্তমানে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েরা তাদের সকল কাজ কর্ম ফেলে এবং অনেক শিক্ষার্থী তাদের লেখাপড়া ছেড়ে সারা দিন ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি হয়ে পড়ে। এটি একটি বড় সমস্যা। এটি বাদ দিলে ইন্টারনেট সত্যিই আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ।

অন্যদিকে আমরা যদি ইন্টারনেট এর সঠিক ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমরা এর মাধ্যমে আমাদের সকল কাজকে সহজ করে তুলতে পারবো। 

সবশেষ কথাঃ

ইন্টারনেট হলো একটি বিশ্বজাল। জালের মতোই এটি সারা বিশ্বকে জড়িয়ে রেখেছে

আমরা যদি ইন্টারনেটকে সঠিক পথে ব্যবহার করতে পারি তাহলে এর সুফল গুলো আমরা পাবো। তবে ইন্টারনেটেও অনেক অপরাধ হয়ে থাকে যা অনেক ক্ষতি কর। মাঝে মাঝেই জানা যায় যে বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের তথ্য হ্যাক হয়ে গিয়েছে। এই অপরাধ গুলোর মাধ্যমে অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে থাকে। আমাদের কে এই সব বিষয় নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তাই আমরা সবসমই চেস্টা করব প্রতিটি জিনিসের সঠিক ব্যবহার করার জন্য। তাহলেই আমরা আমাদের জিবনকে সফল করতে পারব।

আমার লেখাটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাবেন। লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সময় নিয়ে আমার লেখাটি পড়ার জন্য  ধন্যবাদ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
fullbrightscholarships